পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে ভালো রেজাল্ট হয় না। সারা বছর একটু একটু করেই পড়তে হয়। তবেই প্রত্যাশিত রেজাল্ট আসে। হার্ড ওয়ার্ক, টিমওয়ার্ক আর ডেডিকেশন—সাফল্যের তিন চাবিকাঠি। এই তিনের সমন্বয়ের ফল সাদেক কায়েমের বিজয়।
বিএনপি বা ছাত্রদল ধরে নিয়েছিল ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিকল্প নেই। ননচ্যালান্ট, উদাসীন মানসিকতার জন্ম নেয়। কারও কথা না শোনার অভ্যেস গড়ে ওঠে। ওদিকে মানুষ কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই হতাশ। দুই পরিবার প্রথার ওপর ভীষণ বিরক্ত। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব খবর রাখেনি, বলা ভালো—গায়েই মাখেনি। এক বছরে বিএনপি নেতৃত্ব ও মাঠকর্মীর আচরণ মানুষের অসহ্য লেগেছে, রীতিমতো অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। হতাশ বোধ করেছে সাধারণ মানুষ। ভেবেছে, কী লাভ হলো? যেই লাউ সেই কদুতেই ফিরে যাচ্ছে দেশ।
ছাত্রছাত্রীরাও অস্থির হয়ে উঠছিল। দলের মালিক ও মালিকের অন্ধ পদলেহীর খোঁজ ছিল না। কানে তুলো গুঁজে বসে ছিল। আজ হাতেনাতে প্রতিদান পেয়েছে। তারপরেও বলতে হয়, ক্যাম্পাস রাজনীতির ডাইমেনশন ভিন্ন। ছোটখাটো অনেক বিষয় থাকে। ঘটনার সমষ্টি হল রাজনীতি, আর ক্যাম্পাস পলিটিক্সে এর প্রভাব পড়ে। ক্যাম্পাস পলিটিক্স আর জাতীয় রাজনীতি এক নয়। বেশি হতাশ বা বেশি আশাবাদের কারণ নেই।
তবে বড় দলের জন্যে এটা চপেটাঘাত, একেবারে আগাম সতর্কবার্তা। দলকে বুঝতে হবে মানুষ কী চায়। স্মার্ট, বুদ্ধিমান ও ডেডিকেটেড ছাত্রছাত্রী কেন ছাত্রদল করে না—সে প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে। ইন্টেলিজেন্ট ছাত্রছাত্রী দলে ভেড়াতে হবে, নইলে পুরো দল হবে মস্তিষ্কশূন্য। কালচারাল পলিটিক্সের ধারণা না থাকলে বেশিদূর এগোনো যাবে না।
দল যদি কিছু শিখতে পারে, ভালো। ফলাফল দলের জন্য আশীর্বাদও হতে পারে। যে শিক্ষাটি হয়েছে—তা অল্পের ওপর দিয়ে গিয়েছে। এই শিক্ষার দরকার ছিল। হৃদয়ঙ্গম করতে পারলে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। মানুষের পালস ধরতে পারলে কথাই নেই। কিন্তু শিখতে না পারাটাই আবার দলের ইতিহাস।
বল এখন সাদেক কায়েমের কোর্টে। ম্যাচুরিটির সাথে হ্যান্ডেল করতে হবে। করতে পারলে তার দল টিকে যাবে। কাজ দেখাতে পারলে শক্ত অবস্থান হবে। ভীতি দূর করতে পারলে মারাত্মক জনপ্রিয়তা বাড়বে।