গণতন্ত্র না গণধোঁকা?
সৈয়দ ইমাম
দেশের একমাত্র আপোষহীন নেত্রীর দলটি বিগত ১৪ মাস ধরে রাজনীতি-সরকার, প্রশাসন-প্রতিষ্ঠান, বাজার-স্ট্যান্ড একেবারে সর্বস্তরে সফলভাবে প্রকাশ্য ও গোপন সব রকম “আপোষ” এর নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।
তার উপর স্বাধীন বাংলায় বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একক ধ্বজাধারী রাজনৈতিক দল হওয়া স্বত্ত্বেও, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল প্রকৃত গণতান্ত্রিক উত্তরণের সম্ভাবনাকে গলাটিপে হত্যা করে এখন সগৌরবে আধা-স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় ক্ষমতায় বসতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
কি পক্ষপাতদুষ্ট দলীয় নির্বাচন কমিশন, কি নারীদের সংরক্ষিত “টোকেন” আসন কিংবা ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার আলাপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাহী বিভাগের একচ্ছত্রতাকে অক্ষুণ্ণ রাখা — বিশেষজ্ঞরা চাইলে গণতন্ত্রের নামে শুধু নির্বাচনসর্বস্ব ব্যয়বহুল এই উপহাস নিয়ে অনেক বই লিখতে পারবেন।
তাও সেটা ১৯৯৬ এবং ২০০৬ সালে গদি আঁকড়ে ধরে রাখতে চাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা ও তার ফলস্বরূপ অনিবার্য সংকটের অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক আলাপটুকু আপাতত না টেনে।
তাছাড়া সুবিখ্যাত ৩১ দফা তাসবিহ-জপা ঠান্ডা মস্তিষ্কের এ শুভঙ্করের ফাঁকি আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে গেলেই, এই বুঝি হৃদয় ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল। কেননা দুনিয়া ও আখিরাতের সব “বাংলা” সমস্যার সমাধান তো ৩১ দফাতে আছেই।
আর অন্তর্কোন্দলে বিগত ১৪ মাসে শ’এর অধিক খুনের নির্মম পরিসংখ্যান নিয়ে বসলে তো এই রচনা-ই শেষ হবে না।
এর মধ্যে আবার স্বৈরাচার আমলে নিজদলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন বিচারের নির্লজ্জভাবে তোয়াক্কা না করার কথা বলাই বাহুল্য।
অপরদিকে আপোষহীন নেত্রীকে যারা স্বৈরাচারীর বুলেট আর রক্তনদী পেরিয়ে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করার অবিকল্প ভূমিকটুকু রাখল, তারা সবাই বহুদলীয় প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে আপোষহীন থাকাতে এখন হয়ে গেল “বেয়াদব”, “অনভিজ্ঞ” ইত্যাদি ইত্যাদি।
ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে এমন — অন্তঃসারশূন্য গলাবাজদের ভূখণ্ডে সংখ্যাধিক্যতা সর্বরোগের একমাত্র “গণতান্ত্রিক” মহৌষধ!




🔥